Sunday, January 5, 2020

কনিতাঃ শেষ পত্র


📕📗((( শেষ পত্র,))) 📗📕
---- কাজী ইলিয়াছ আলী অশ্রু ---
''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''
''এই যে শুনছেন! এই মিষ্টার শুনছেন!
আমাকে একটা ফুল ছিঁড়ে দিবেন!
প্লিজ! দিননা একটা ফুল ছিড়ে,
এমনি মায়াভরা সুরে বললো সে,
কইলাম;গাছে গায়ে ব্যথা লাগবে,
আর গাছের ফুল গাছেই সুন্দর,
আমি পারবো না ছিঁড়ে দিতে।
মুহূর্তেই বারো বছেরের বাড়ন্ত কিশোরীর মায়াধরা মুখটা
ফ্যাঁকাসে হয়ে উঠলো। সে আবার বললো-
খুব মিনতি করে-প্লিজ একটা ফুল দিননা !
মনের ভিতর মায়া ধরে গেলো,
খুব কষ্ট করে একটা ফুল ছিঁড়ে দিতেই-
একঝলক হাসি ফুঠে উঠলো তার মুখে,
এতো সুন্দর হাসি আর কোনোদিন দেখিনি এই পৃথিবীর বুকে,
সেই হাসিতে হাসছিলো গোটা পৃথিবী যেনো তার সাথে,
আমি মুগ্ধমনে দেখছিলাম নয়ন ভরে।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে, আসি তবে-
কইলো সে মিষ্টি হেসে,
কইলাম; আরো কিছুক্ষণ থাকনা আমার পাশে!
একটু আরো হাসো না- দেখি নয়ন ভরে।
করমর্দনের উদ্দেশ্যে হাত বাড়িয়ে- বললো মৃদু হেসে-
আজ থেকে আমার বন্ধু হয়ে থাকবেন সারাটা জীবন জুড়ে,
সেই প্রথম দেখা, প্রথম কথা, কখনো কি আর তুমার মনে পড়ে......।

শেষ বিদায়ের আগে শেষ পত্রখানী লিখছি তুমার নামে,
আবেগী চোখের জল গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ছে,
খুব ইচ্ছে ছিলো সামনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করি-
কতোটা সুখী হয়েছো,খুব ইচ্ছে ছিলো শেষবার তুমার মুখখানী দেখি-
নয়ন ভরে।
কিন্তু তা আর হলো না।
পুতুল খেলা শেষে - খেলনা ছুঁড়ে ফেলে দিলে'ত আর খেলা হয় না,
প্রয়োজনটা ফুরিয়ে গিয়েছিলো, তাই-
হাতের পুতুলের মতো করে আমাকে ছুঁড়ে ফেললে-
অবহেলায়- ঘৃণায়।
মাঝে মাঝে ভেবে খুব হাসি পায়-
আমার জন্য বিষ খেয়ে মরতে চাওয়া সেই তুমিই
আজকের তুমি।
এখন আর আমার নামটাও শুনতে চাও না,
আজও জানা হলো না- কি ছিলো আমার অপরাধ।
তবু, কৈফত চাইনি, নালিশ করিনি, অভিশাপও দেইনি,
তুমি সুখে থাকলেই- আমি খুশি।
জানি না তুমি কেমন আছো?
জানি না- আমার শেষ পত্রখানী-
তুমার হাতে পৌঁছাবে কি না?
হয়তো কোনোদিন আর ফিরবো না তুমার স্মৃতির শহরে
যেখানে রাস্তায় রাস্তায় তুমার গায়ের গন্ধ পাওয়া যায় বাতাসে।
কপি হাউস কিবা রেস্টুরেন্ট,বকুলতলা কিবা রমানার বটতলার
স্মৃতিগুলো যেখানে জীবন্ত হয়, কথা কয়,
বর্তমানকে নিয়ে যায় সতের বছর পিছনে,
সেই আমিকে ফিরে পাই,
জীবনের প্রথম ভালোলাগা, প্রথম মুগ্ধতা
জীবন্ত হয়ে চোখের সামনে ভেসে উঠে,
দুটি নদী যেমন মোহনায় মিশে এক হয়ে যায়,
দুজনে ছিলাম তাই,
দুটি মানুষের একটি প্রাণ,
একজন অন্যজনের ছায়া।
অথচ;
আজকে আমি পৃথিবীর নিঃসঙ্গদের একজন।
তুমার আর আমার মাঝে ব্যবদান এখন আকাশ-পাতাল।
আমার বসতি এখন তুমার দৃষ্টিসীমা থেকে অনেক দূরে,
আর ফিরবো না তুমার স্মৃতির শহরে ।
জীবনের এই শেষ পত্রে নিবেদন রেখে গেলাম-
যদি শুনতে পাও,
মহানিদ্রায় আমি হেলে পড়েছি মৃত্যুর কোলে,
একান্তে দুফোটা চোখের জল ঢেলে দিও-
শুধু আমার কথা ভেবে ''......।।
==============================================
🔻 (( শেষ পত্র,))
🖋🖋 কেমিয়া অশ্রু, ১৬-০৯-২০১৯ইং,
-----------------------------------------------------------------------------

0 comments:

Post a Comment